আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না দুই বছরের বা তার বেশি দন্ড পাওয়া রাজনীতিকরা । আপিল শুনানী চলাকালে দণ্ডিতদের ভোটের পথ বন্ধ জানিয়ে হাই কোর্টের দেওয়ার আদেশের বিরুদ্ধে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেনের আবেদন আপিল বিভাগের সাড়া পায়নি। বিচারকি আদালতের দেওয়া দণ্ড ও সাজা (কনভিকশন অ্যান্ড সেন্টেন্স) স্থগিত চেয়ে জাহিদ হোসেনের করা আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন সাত বিচারকের আপিল বেঞ্চ বুধবার ‘নো অর্ডার’ দিয়েছে।
এর ফলে হাই কোর্টের দেওয়া ওই আদেশই বহাল থাকছে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দুই বছরের বেশি সাজায় দণ্ডিত কারও আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকছে না বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী।
দুর্নীতির দায়ে বিচারকি আদালতের দেওয়া দণ্ড ও সাজা (কনভিকশন অ্যান্ড সেন্টেন্স) স্থগিত চেয়ে হাই কোর্টে আবেদ করেছিলেন বিএনপি নেতা আমান উলাহ আমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ওয়াদুদ ভূঁইয়া, মো. মশিউর রহমান ও মো. আব্দুল ওহাব।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার ওই আবেদন খারিজ করে দেয়।
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কারও দুই বছরের বেশি সাজা বা দণ্ড হলে সেই দণ্ড বা সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, যতক্ষণ না আপিলে ওই দণ্ড বাতিল বা স্থগিত হয়।
আদালতের এই আদেশের ফলে দুই দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথও আটকে যায়।
পাঁচ বিএনপি নেতার মধ্যে জাহিদ হোসেন মঙ্গলবারই হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে যান। কিন্তু চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন সাত বিচারকের আপিল বেঞ্চ বুধবার এ বিষয়ে শুনানি করে ‘নো অর্ডার’ দিলে হাই কোর্টের আদেশই বহাল থাকে।
আপিল বিভাগে এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করে।
আপিল বিভাগের আদেশের পর খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, “হাই কোর্টের আদেশই বহাল আছে। নির্বাচন কমিশন আদালতের এ আদেশ মানতে বাধ্য। ফলে বিএনপির ওই পাঁচ নেতা, খালেদা জিয়া, ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাসহ দুই বছরের বেশি সাজায় দণ্ডিত কেউ এবার নির্বাচন করতে পারবেন না।”
অন্যদিকে জাহিদ হোসেনের অন্যতম আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী বলেন, “এখন দণ্ডিতরা নির্বাচন করতে পারবে কি না- সেটা নির্ভর করছে রিটার্নিং কর্মকর্তার ওপর। কারণ কেউ নির্বাচন করতে পারবে কি পারবে না, সেটা পুরোপুরি রিটার্নিং কর্মকর্তার এখতিয়ার।”









