আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় গেলে ‘রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার’ প্রতিশ্রুতি এসেছে ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে।
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে সোমবার ঢাকার হোটেল পূর্বাণীতে ৩৫ দফা প্রতিশ্রুতি রেখে এই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সমম্মেলনে গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেনের ডান দিকে ছিলেন বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বাঁ দিকে ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ও নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না।
কামাল হোসেনের প্রারম্ভিক বক্তৃতার পর মান্না ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার পড়ে শোনান।
কামাল হোসেন তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, “২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে এই প্রহসনটি হয়েছিল, সেটি সংবিধান বর্ণিত জনগণের প্রত্যেকের ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই নির্বাচনের মাধমে জনগণ এই রাষ্ট্রের মালিকানা হারিয়েছিল।”
গত দশ বছর সরকারে থাকা আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে দলটির সাবেক নেতা কামাল বলেন, “জনগণ যখন মালিক থাকে না, তখন রাষ্ট্রের মালিক হয়ে পড়ে কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠী, দেশি বিদেশি নানা গোষ্ঠী। এর মাশুল দিতে হয়েছে এই দেশের মানুষকে। এটা আপনারাও হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেছেন।”
জোটের ইশতেহার থেকে পড়ে শুনিয়ে মান্না বলেন, “নির্বাচনে জিতে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের কল্যাণে সরকার পরিচালণা করবে। এই পরিচালনার মূলনীতি হবে ঐক্যমত্য, সকলের অন্তর্ভুক্তি এবং যে কোনো রকম প্রতিহিংসা থেকে মুক্ত থাকা।”
মান্না বলেন, “‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ’ সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বর্ণিত এই নীতির ভিত্তিতে সরকার পরিচালণায় যাবতীয় পদক্ষেপের ভিত্তি হবে রাষ্ট্রের মালিকগণের মালিকানা সুদৃঢ় করা।”
ঐক্যফ্রন্ট প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, রাষ্ট্রের এই মালিকানা কেবল নির্বাচনে জেতা মানুষের হবে না, এই মালিকানা থাকবে পরাজিত দলের নেতা কর্মী সমর্থকদেরও। রাষ্ট্র পরিচালিত হবে নির্বাচনে পরাজিতদের ‘মতামত ও মালিকানা’ নিশ্চিত করে।
ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে ঐক্যফ্রন্টের ৩৫ দফার ইশতেহারে।
কেউ যাতে দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে না পারে, ‘একদলীয় শাসন; যাতে ফিরে না আসে, সেই ব্যবস্থা ঐক্যফ্রন্ট করবে।
তবে বর্তমান কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করা হবে না এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি এসেছে তাদের ইশতেহারে।
কামাল হেসেন বলেন, “এটা জনগণের ইশতেহার। জনগণের কল্যাণ, জনমতের ভিত্তিতে এটা তৈরি করা হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের মতামত গ্রহণের ধারা অব্যাহত থাকবে। আমরা ভোটের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে দেশে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাস করি।”
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পাঁচ দলের মনোনীত প্রার্থীরা আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বিএনপির ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে।
তিনশ আসনের মধ্যে ২৪২টি আসন বিএনপি নিজেদের জন্য রেখে জাতীয় যুক্তফ্রন্টের শরিকদের ১৯টি আসন ছেড়ে দিয়েছে। এর মধ্যে গণফোরাম সাতটি, জেএসডি চারটি, নাগরিক ঐক্য চারটি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ চারটি আসন পেয়েছে। বাকি ৩৯টি আসন জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটকে দিয়েছে বিএনপি









