দুর্নীতির অভিযোগ পেলে অনুসন্ধান পর্যায়েই সংশ্লিষ্টদের ‘অবৈধ সম্পদ’ জব্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে নতুন গঠিত ‘অপরাধলব্ধ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ইউনিটের’ কার্যক্রম নিয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতদিন কারও বিরুদ্ধে মামলা আদালতে গড়ানোর পরই সাধারণত দুদক ওই ব্যক্তির সম্পত্তি জব্দ করার পদক্ষেপ নিত। এখন তা অনেক আগেই শুরু হবে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী সভার পর সাংবাদিকদের বলেন, “এখন থেকে দুর্নীতির অনুসন্ধান বা তদন্তকালে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি দুদকের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কোনোক্রমেই দুর্নীতিবাজ কিংবা অন্য কাউকে এই সম্পদ ভোগ করতে দেওয়া হবে না।”
জব্দ সম্পত্তি দুদকের অধীনে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “শুধু তাই নয় ২০০৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দুদকের মামলায় যত সম্পদ ফ্রিজ বা ক্রোক হয়েছে, তাও দুদকের আওতায় নিয়ে আসা হবে।”
সভায় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, “২০০৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অবৈধ সম্পদ সংক্রান্ত চলমান এবং রায় হওয়া মামলায় সম্পৃক্ত সকল প্রকার অবৈধ সম্পদ জব্দ/ক্রোক/অবরুদ্ধ করে মামলার তালিকা অনুযায়ী রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে কমিশনে উপস্থাপন করতে হবে।”
ইতোমধ্যে দুদকের যেসব মামলায় আসামিদের শাস্তির পাশাপাশি আর্থিক জরিমানা ও আসামির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তা কমিশনের রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করতেও কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
নির্বাচনের পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর ঘোষণা দেওয়া ইকবাল মাহমুদ বলেন, “এখন থেকে প্রতিটি অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সম্পদ জব্দ/ক্রোক করতে হবে। অবৈধ সম্পদ ভোগ করার সুযোগ কাউকেই দেওয়া হবে না। অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে আনার জন্য দুদক ব্যবস্থা নেবে।”
এসব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনো প্রকার দুর্নীতি, সম্পদের ক্ষতিসাধন কিংবা অব্যস্থাপনার সুযোগ যাতে না থাকে, এমন একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানান সাবেক সচিব ইকবাল মাহমুদ।
তিনি বলেন, “এসব সম্পদের যারা জিম্মাদার হবেন, তাদের জবাবদিহিতার বিষয়টিও বিশেষভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। দুর্নীতির একটি পথ বন্ধ করে আরেকটি পথ কখনই খুলতে দেওয়া যাবে না।”
যেসব মামলার আসামিরা মারা গেছেন, কিন্তু অবৈধ সম্পতি রয়ে গেছে; এসব অবৈধ সম্পদ ক্রোক/জব্দ/বাজেয়াপ্ত করার জন্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনাও দেন দুদক চেয়ারম্যান।
সভায় দুদকের ‘অপরাধলব্ধ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ইউনিটের’ প্রধান কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির, গোয়েন্দা ইউনিটের পরিচালক, আইন অনুবিভাগর পরিচালক ও বিশেষ তদন্ত অনুবিভাগের পরিচালকসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।









