ইস্টার সানডের পরবের দিন শ্রীলঙ্কায় অন্তত আট জায়গায় গির্জা ও হোটেলে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০৭ জনে।
শ্রীলঙ্কায় গৃহযুদ্ধের পর গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় এই হামলার ঘটনায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে দেশটির সরকার। পাশাপাশি সোম ও মঙ্গলবার ঘোষণা করা হয়েছে সরকারি ছুটি।
দেশটির প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রাভন বিজয়বর্ধনে বলেছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কারফিউ জারির এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
পাশাপাশি গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে সেখানে ফেইসবুক, হোয়াটস অ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যমগুলোও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার।
বিবিসি জানিয়েছে, কলম্বোর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন হিসেবে মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরাই অধিকাংশ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছেন তদন্তকারীরা।
দেশটির প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলছেন, হামলাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে, একটি গোষ্ঠীই হামলাগুলো চালিয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
“কোনো উগ্রপন্থি দল এ দেশে থাকতে পারবে না। তাদের তৎপরতা বন্ধের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই আমরা নেব।”
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা এ হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়ে নাগরিকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
আর হামলার ঘটনার পর নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করে প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমসিংহে বলেছেন, “আমি এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। দেশের মানুষকে আমি ঐক্যবদ্ধ ও শক্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।”
এক প্রত্যক্ষদর্শী বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর দৌঁড়ে সেইন্ট অ্যান্থনির চার্চে গিয়ে মেঝেতে লাশ পড়ে থাকতে দেখার কথা বলেছেন বিবিসিকে।কামাল নামের ওই ব্যক্তি বলেন, পৌনে ৯টার দিকে বিকট ওই বিস্ফোরণের শব্দ পান তিনি। এরপর লোকজন দৌঁড়ে বের হয়ে আসতে দেখেন। তারা চিৎকার করে অনেক লোকের মৃত্যুর কথা বলছিল।
“আমরা দৌড়ে গির্জার ভিতরে গিয়ে লাশ পড়ে থাকতে দেখলাম। আমরা প্লাস্টিক দিয়ে সেগুলো ঢেকে দিলাম। এরপর পুলিশ এসে সবাইকে সেখান থেকে বের করে দিল।”
ইস্টার সানডের প্রার্থনার জন্য ওই গির্জায় পাঁচ শতাধিক লোক জড়ো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কেউ এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। সোম ও মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার সব সরকারি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করাা হয়।









