নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিভিন্ন অপকর্মের হোতা শাওন এবার ধরা পড়েছে। সৈয়দপুর থানা পুলিশ শনিবার তাকে প্রতারনামুলক ভাবে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সময় গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার শাওন দীর্ঘদিন থেকে নিজেকে যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে আসছিল। আর এ পরিচয়ের মাধ্যমে সে বিভিন্ন অপকর্ম করছিল।
স্থানীয় উপজেলা যুবলীগ দীর্ঘদিন থেকে এই লম্পট শাওন কে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু এই ধুরন্ধর শাওন গোপনে তার অপকর্ম পরিচালনা করায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে ওই লম্পট ও প্রতারক শাওন পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে,লম্পট শাওন এক সময়ে যুবলীগের সদস্য পদ হাছিল করেছিল। কিন্তু যুবলীগের নেতা-কর্মীরা তার নোংরামী ও অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার কথা জানতে পেরে অনেক আগেই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।
ভন্ড ও প্রতারক শাওন যুবলীগের কেউ নন। সে যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করত বলে জানা গেছে।
ভন্ড ও প্রতারক শাওনের ব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মোস্তফা ফিরোজ ও আসাদুল ইসলাম আসাদ “মুক্তভাষা”কে বলেন,শাওন যুবলীগের কেউ নন।বিভিন্ন অপকর্মসহ প্রতারনামুলক কাজে জড়িত থাকায় তাকে অনেক আগে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যা ইতি পুর্বে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
ঘটনায় প্রকাশ,অপহরণ করে চাঁদা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে শাওন ও এক নারীসহ ৩ জনকে আটক করেছে সৈয়দপুর থানা পুলিশ। শনিবার (৬ জুন) রাতে তাদের আটক করা হয়। ওই ঘটনায় লিপ্ত অপর ২ সদস্য পালিয়ে যায়।
থানা সূত্রে জানা যায়, রংপুর গঙ্গাচড়া এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে জসিম উদ্দিন ব্যক্তিগত কাজে সৈয়দপুরে আসেন। কাজ শেষে রংপুরে যাওয়ার পথে সৈয়দপুর বাসটামিনালে পৌঁছালে ২ ব্যক্তি নিজেদের প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে তাকে ইয়াবা ব্যবসার অপবাদ দিয়ে অপহরণ করে শহরের মুন্সিপাড়া মহল্লার খেজুরবাগ মসজিদের পাশের একটি তিন তলা বাড়ির নিচ তলায় আটক করে রাখে।
পরে বাসার মালিক মৃত মোসলেম উদ্দীনের ছেলে আবু বিন আজাদ (শাওন) এসে তার সহযোগিরাসহ আটক জসিমকে মার ডাং শুরু করেন। এর পর ওই বাসার ভাড়াটিয়া সুন্দরী আকতারা ও জসিমকে উলঙ্গ করে ভিডিও ধারন করে শাওন। ভিডিও ধারনের পর তাকে থানা পুলিশে দিবে এবং ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জসিমকে হুমকি দেওয়া হয়।
এজন্য তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা দাবী করা হয়। ভয়ে জসিম তার কাছে থাকা নগদ ১০ হাজার এবং বাড়ি থেকে বিকাশের মাধ্যমে আরো ২০ হাজার টাকা এনে তাদের দেয়। বাকী টাকা পরে দেওয়ার কথা বলে রফাদফা করে।
সৈয়দপুর থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে জসিমকে উদ্ধার করে এবং অপহরণ দলের মুলহোতা ভন্ড শাওন, আকতারা বেগম ও তার স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় রাতেই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং -৭।
অভিযোগ রয়েছে, শাওন ওই সুন্দরী নারীকে বাসায় রেখে দেহ ও মাদক ব্যবসা করে এবং টাকা ওয়ালা ব্যক্তিদের তার সহযোগীর মাধ্যমে ফাঁসিয়ে বাসায় এনে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তাছাড়া শাওনের বিরুদ্ধে সৈয়দপুরস্থ বাংলাদেশ আরমি বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করাসহ আরও একটি মামলা রয়েছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) অশোক কুমার পাল বলেন, এরকম একটি গ্রুপ দীর্ঘ দিন থেকে এ ধরনের কাজ করছে। এর আগে একটি গ্রুপকে আমরা ধরেছি। আজকেও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৫ জনের মধ্যে ৩ জনকে আটক করেছি। বাকী ২ জনকে গ্র্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।









